সুনামগঞ্জ , মঙ্গলবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৫ , ২৪ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বর্বরতার প্রতিবাদ বিক্ষোভে উত্তাল সুনামগঞ্জ গাজার ৫০% ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে, সংকুচিত হয়ে পড়ছে ফিলিস্তিনিরা মার্চে ৪৪২ নারী নির্যাতনের শিকার, ধর্ষণ ১৬৩ ছয় দেশকে গুরুতর পরিণতির বিষয়ে সতর্ক করলো ইরান সিলেটে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির লাশ উদ্ধার মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধা নিহত হত্যা মামলায় জামিনে এসে বাদীকে হত্যার হুমকি জামালগঞ্জে বৌলাই নদীতে নৌকা ডুবে নিহত ৪, আহত ১ জামালগঞ্জে দূর্নীতির অভিযোগে সদর ইউপি চেয়ারম্যান কামাল হোসেন বরখাস্ত অর্ধযুগ পর পরিবারের সঙ্গে ঈদ করবেন খালেদা জিয়া “এমন ভূমিকম্প গত ২০ বছরে দেখা যায়নি মিয়ানমারে” ডিসিদের প্রতি ১২ নির্দেশনা প্রধান উপদেষ্টার বিএনপি নেতা কামরুলের উদ্যোগে ইফতার মাহফিলে তৃণমূল নেতাকর্মীদের জোয়ার ‘জয় বাংলা’ স্লোগান কারও দলের নয় : কাদের সিদ্দিকী সয়াবিন তেল লিটারে ১৮ টাকা বাড়াতে চান ব্যবসায়ীরা জুলাই যোদ্ধাদের আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ পণাতীর্থে লাখো মানুষের পুণ্য স্নান শান্তিগঞ্জ-ডুংরিয়া সড়ক নির্মাণকাজের তথ্য নিয়ে লুকোচুরি স্বাধীনতার সুফল জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে হবে : জেলা প্রশাসক

গাজার ৫০% ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে, সংকুচিত হয়ে পড়ছে ফিলিস্তিনিরা

  • আপলোড সময় : ০৮-০৪-২০২৫ ০১:২১:২৫ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৮-০৪-২০২৫ ০১:২১:২৫ পূর্বাহ্ন
গাজার ৫০% ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে, সংকুচিত হয়ে পড়ছে ফিলিস্তিনিরা
সুনামকণ্ঠ ডেস্ক :: গত মাসে হামাসের বিরুদ্ধে পুনরায় যুদ্ধ শুরু করার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় নাটকীয়ভাবে তার অবস্থান প্রসারিত করেছে। এখন তারা গাজার ৫০% এরও বেশি ভূখ- নিয়ন্ত্রণ করছে। আর ফিলিস্তিনিরা ক্রমশ সংকুচিত হয়ে যাওয়া জমিতে পরিণত হচ্ছে। ইসরায়েলি সেনা এবং মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর মতে, সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা সবচেয়ে বড় সংলগ্ন এলাকা হল গাজা সীমান্তের আশেপাশে। এখানে সেনাবাহিনী ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর, কৃষিজমি এবং অবকাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছে। ফলে অঞ্চলটি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে এই সামরিক বাফার জোনের আকার দ্বিগুণ হয়েছে। কিন্তু মানবাধিকার গোষ্ঠী এবং গাজা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসরায়েলের দখলে থাকা জমি তারা দীর্ঘমেয়াদি নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার জন্য ব্যবহার করতে পারে। এই জমির মধ্যে একটি করিডোর রয়েছে যা এই অঞ্চলের উত্তর থেকে দক্ষিণকে বিভক্ত করেছে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গত সপ্তাহে বলেছিলেন যে হামাস পরাজিত হওয়ার পরেও, ইসরায়েল গাজার নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখবে এবং ফিলিস্তিনিদের দেশত্যাগে বাধ্য করবে। পাঁচজন ইসরায়েলি সেনা দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানিয়েছেন, ১৮ মাস আগে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি সীমান্তের কাছে ধ্বংস এবং বাফার জোনের পদ্ধতিগত সম্প্রসারণ চলছে। নেতানিয়াহু আরও বলেছিলেন যে, ইসরায়েল দক্ষিণ গাজাজুড়ে আরেকটি করিডোর তৈরি করতে চায়, যা রাফা শহরকে বাকি অঞ্চল থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে। পুরোপুরি নিশ্চিহ্নের পথে রাফা : ফিলিস্তিনের গাজায় অব্যাহত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। ২০২৩ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া হামাসের বিরুদ্ধে এ অভিযানে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৫০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে পুরো উপত্যকা। হামাসের ওপর চাপ বাড়াতে সম্প্রতি গাজার বিভিন্ন অংশে হামলার মাত্রা বাড়িয়েছে ইসরায়েল, যার বড় একটি অংশ চালানো হচ্ছে দক্ষিণ গাজার রাফা শহরকে লক্ষ্য করে। এতেই প্রায় নিশ্চিহ্ন হতে চলেছে শহরটি। খবর আনাদোলুর। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর, স্থিরচিত্র ও ভিডিও থেকে রাফার বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে ¯পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। এসবের ওপর ভিত্তি করে সহজেই বলা যায়, আগের সেই রাফা এখন আর নেই। পুরো অঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে আছে শুধু ইসরায়েলি হামলার ভয়াবহতা। আবাসিক স্থাপনা, অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ, মসজিদ-হাসপাতাল, সড়ক- সবই যেন এক হয়ে গেছে। গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে মাটির সঙ্গে। আর যেকটি ভবন এখনো দাঁড়িয়ে আছে, সেগুলোও যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। যেন জনমানবশূন্য এক মৃত্যুপুরী। গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত সরকারের গণমাধ্যম কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত সময়ে রাফার প্রায় ৯০ শতাংশ আবাসিক স্থাপনা ধ্বংস করেছে ইসরায়েল। এর মধ্যে ২০ হাজার ভবনে ৫০ হাজার অ্যাপার্টমেন্ট ছিল। হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে শহরের প্রায় ১২ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা। এক কথায় যাকে গণহত্যা ও জাতিগত নিধনের এক ভয়াবহ উদাহরণ বলা চলে। বিবৃতিতে বলা হয়, শহরটির ২৪টি সুপেয় পানির কুপের মধ্যে ২২টিই ধ্বংস করা হয়েছে। পয়ঃনিষ্কাশন নেটওয়ার্কের ৮৫ শতাংশ অকেজো হয়ে পড়েছে এবং আটটি স্কুল ও শিক্ষাভবন ধ্বংস হয়েছে। ১২টি মেডিকেল সেন্টারের কার্যক্রম একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। পাশাপাশি ম্যাটারনিটি হাসপাতাল ও ইন্দোনেশীয় হাসপাতালও ধ্বংস হয়েছে। শতাধিক মসজিদ পুরোপুরি বা আংশিকভাবে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। মাটির সঙ্গে মিলিয়ে গেছে প্রায় ৩২০ কিলোমিটার সড়ক। এতে আরো বলা হয়, নিরস্ত্র বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর ভয়াবহ গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল। পাশাপাশি পরিকল্পিতভাবে অবকাঠামো, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও আবাসিক ভবনগুলোকে পুরোপুরি ধ্বংস করছে, যা শহরটিকে বসবাসের অযোগ্য করে তুলছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ইসরায়েলি হামলায় অসংখ্য মানুষ নিহত হয়েছে। তাদের সবাই এক সময় জীবন বাঁচাতে বাড়ি ছেড়েছিলেন। নিজ নিজ বাড়ির ধ্বংসস্তূপ যাচাই করতে এসে প্রাণ দিতে হয়েছে তাদের। কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা গাজার জানায়, ইসরায়েলি বাহিনী রাফাকে গাজার অন্য অংশ থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে। তাদের দাবি, তারা 'মোরাগ করিডর' নামে একটি অঞ্চল তৈরি করছে, যার মাধ্যমে গাজা উপত্যকাকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হচ্ছে। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই রাফায় ব্যাপক হামলা চালানো হচ্ছে। এদিকে রাফা থেকে ইসরায়েলি সৈন্যদের সরিয়ে নিয়ে বাস্তুচ্যুত বাসিন্দাদের ফেরাতে, সাহায্য সরবরাহের জন্য নিরাপদ করিডোর প্রস্তুত ও বিধ্বস্ত শহরে পুনর্গঠন প্রচেষ্টা শুরুর জন্য অবিলম্বে চাপ প্রয়োগের দাবি জানিয়েছে গাজা সরকারের গণমাধ্যম কার্যালয়। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি নৃশংস হামলায় প্রায় ৫০ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স